শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি, বরিশাল।।
আগৈলঝাড়ায় চাঁদার দাবিতে শ্রমিকলীগ নেতার ছেলের বিয়ের বর যাত্রীর গাড়ি বহরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতির নেতৃত্বে হামলায় একটি মাইক্রোবাস, দুটি মোটর সাইকেল ভাংচুর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
হামলার ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ফিরোজ সিকদার তাঁর ভাই মিজান সিকদারসহ ৫জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহারভুক্ত আসামী মজিদ সোহাগ সিকদার ও জোবায়েদ ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে।
উপজেলার পয়সারহাট গ্রামের মৃত সাহেব আলী শেখ এর ছেলে বাকাল ইউনিয়ন শ্রমিকলীগের সদস্য আব্দুর রাজ্জাক শেখ এর দায়ের করা এজাহারের বরাত দিয়ে আগৈলঝাড়া থানা পরিদর্শক মো. গোলাম ছরোয়ার জানান, বাদী ড্রেজারের মাধ্যমে বালু ব্যবসার সাথে জড়িত। তার বালুর শিপ পয়সা থেকে পাশ^বর্তি কোটালীপাড়া উপজেলার মধুর নাগরা যাবার পথে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ফিরোজ সিকদারের বাড়ি সংলগ্ন সরকারী খাল দিয়ে যাবার সময় মৃত এনায়েত সিকদারের ছেলে ফিরোজ সিকদার, তার ভাই মিজান সিকদারসহ অন্যান্যরা বিভিন্ন রকম চাঁদা দাবি করে আসছিলো। রাজ্জাক শেখ তাদের চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় মিজান সিকদার তাকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যারও হুমকি দেয়।
এরই ধারাবাহিকতায় পূর্ব বিরোধের জের ধরে শুক্রবার বিকেলে রাজ্জাক শেখ তার ছেলের বিয়ের জন্য এলাকার গন্যমান্য লোকজন নিয়ে একই উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের চক্রিবাড়ি গ্রামে কনের বাড়ির উদ্যেশ্যে রওয়ানা দিলে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ফিরোজ সিকদারের বাড়ির সামনে পৌছলে তাঁর নেতৃতে তার ভাই মিজান সিকদারসহ একই এলাকার লুৎফর সিকদারের ছেলে রুমি সিকদার, শফিক সিকদারের ছেলে মনির সিকদার, মজিদ সিকদারের ছেলে সোহাগ সিকদার দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিতভাবে বর যাত্রীর গাড়ি বহরে হামলা চালায়। তাঁরা হামলা চালিয়ে বর যাত্রী বহনকারী একটি মাইক্রোবাস, দুটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে।
এ ঘটনার পরে উল্লেখিতরা রাজ্জাকের ড্রেজার কর্মচারী রাসেল শেখকে বেদম মারধর করে আহত করে। আহতাবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
উল্লেখিত ঘটনায় রাজ্জাক শেখ বাদী হয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ফিরোজ সিকদার তাঁর ভাই মিজান সিকদারসহ ৫জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করে, যার নং-৬ (১৩.৮.২১)।
থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাজহারুল ইসলাম মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মো. মাহাবুব আলম খান শুক্রবার সন্ধ্যার পরে অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহারভুক্ত আসামী পয়সা গ্রামের মজিদ সিকদারের ছেলে মো. সোহাগ সিকদারকে (৩৬) গ্রেপ্তার করেছে।
উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট আবুল কাশেম সরদার মামলার বাদী আব্দুর রাজ্জাক শেখকে বাকাল ইউনিয়নের শ্রমিকলীগের কর্মী দাবি করে বলেন, বিষয়টি তাদের স্থানীয় সমস্যা। দলীয় কোন বিরোধ বা সমস্যা নয়। কারো ব্যাক্তিগত দায় দল নেবে না।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ফিরোজ সিকদার বলেন, শুক্রবার ছিল তার বাবার মৃত্যুবার্ষিকী। সে উপলক্ষে তাঁর পরিবার সদস্যরা বাড়িতে একত্রিত হয়েছিল। তাঁর ভাই মিজান ও রাজ্জাকের ভাইর ছেলে আজিজুল একটি ঘটনা নিয়ে মামারারি শুরু হয়। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে পরে উভয় পক্ষের মধ্যে লাঠি-সোটা নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হলেও পরে আর কোন মারামারি হয়নি।
থানা পুলিশ পরিদর্শক মো. গোলাম ছরোয়ার জানান, উল্লেখিত ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের পর আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।